শনিবার, ৩০ নভেম্বর ২০২৪, ০৬:৩১ অপরাহ্ন
আফরিনা ফেরদৌস : আমরা সাধারণত জিরা একটি মসলা হিসেবে খাই। তরকারির স্বাদ বাড়ানোর সঙ্গে সঙ্গে এর অন্যন্য গন্ধ অনেকে পছন্দ করেন। অনেকে শুধু জিরাও খান। তবে এই স্বাদ আর গন্ধের বাইরেও জিরার অনেক উপকারিতা আছে। সেক্ষেত্রে জিরা পানিতে ভিজিয়ে রেখে পান করতে হবে ‘জিরা পানি’। এটি ত্বকসহ বিভিন্ন রোগের জন্য বেশ ভালো। প্রাচীনকাল থেকেই অনেক রোগের জন্য মানুষ জিরা পানি খেয়ে আসছেন। এর পুষ্টিগুণও রয়েছে বেশ। ফুটন্ত পানিতে জিরা দিয়ে দশ মিনিট ফুটিয়ে তারপর ছেঁকে, ঠাণ্ডা করে পান করতে হবে এই জিরা পানি। আসুন এখন জেনে নিই, জিরা পানির উপকারিতা সম্পর্কে।
হজম শক্তি বৃদ্ধি করে: জিরা পানি হজম শক্তি বৃদ্ধি করতে সাহায্য করে। সকালে খালি পেটে জিরা পানি খেলে হজমজনিত সমস্যা দূর হয়ে যায়।
রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়ায়: জিরার অনেক পুষ্টিগুণ থাকায় এটি শরীরের রোগ প্রতিরোধ করতে সাহায্য করে। সবজির সঙ্গে খাওয়ার চেয়ে জিরা পানি পান করলে বেশি কাজে দেয়।
শরীরের বিষক্রিয়া কমায়: জিরা শরীরের টক্সিন বা বিষক্রিয়া কমাতে সাহায্য করে। জিরা মূলত এক ধরনের বীজ। তবে এটি লিভার এবং পাকস্থলীর জন্য অনেক ভালো। কারণ জিরাতে অ্যান্টিঅক্সিডেন্টের উপস্থিতি থাকায় এটি শরীরের বিভিন্ন অঙ্গকে সচল রাখতে সাহায্য করে।
রক্তস্বল্পতা দূর করে: জিরা প্রচুর পরিমাণে আয়রন থাকে যার ফলে এটি রক্তশুন্যতা বা রক্তস্বল্পতা দূর করে। এছাড়া এটি রক্তে অক্সিজেন বহনকারী হিমোগ্লোবিন বাড়াতে সাহায্য করে।
ঘুমের জন্য ভালো: যারা ঘুমের স্বল্পতা বা ইন্সমোনিয়াতে ভোগেন তাদের জন্য জিরা পানি খুবই ভালো। প্রতিদিন ঘুমাতে যাওয়ার পূর্বে এক গ্লাস জিরা পানি খেলে রাতে ভালো ঘুম হয়।
স্মৃতিশক্তি বৃদ্ধি: জিরা পানি স্মৃতিশক্তি বৃদ্ধি করতে সাহায্য করে। যারা মোটামুটি অল্প বয়স থেকে জিরা পানি পান করে আসছেন, অন্যদের তুলনার তাদের স্মৃতিশক্তি বেশি ভালো।
গ্যাস্ট্রিকের সমস্যা দূর করে: জিরা পানি গ্যাস্ট্রিকের সমস্যা দূর করতে সহায়তা করে। যাদের গ্যাস্ট্রিকের সমস্যা রয়েছে তারা ডাক্তারের পরামর্শ নিয়ে নিয়মিত জিরা পানি পান করতে পারেন।
কোষ্ঠ্যকাঠিন্য দূর করে: জিরা পানি কোষ্ঠ্যকাঠিন্য দূর করতে সাহায্য করে। যাদের কোষ্ঠ্যকাঠিন্যের সমস্যা রয়েছে তারা দিনে দুইবার জিরা পানি পান করতে পারেন।
পানিশুন্যতা রোধ করে: জিরা প্রচুর পরিমাণে অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট রয়েছে। যা শরীরে পানি ধরে রাখতে সাহায্য করে। জিরা পানি পান করলে তা শরীরের পানিশুন্যতা রোধ করে।
অ্যাসিডিটি কমায়: একসঙ্গে অনেক খাবার খেয়ে ফেললে বা বিভিন্ন স্বাদের খাবার একই সময়ে খেলে অ্যাসিডিটির সমস্যা দেখা দেয়। এ সমস্যা এড়াতে খাওয়ার পর পরই পান করতে পারেন জিরা পানি।
গর্ভবতী মায়েদের জন্য পুষ্টিকর পানীয়: জিরা পানি গর্ভবতী মায়েদের জন্য একটি অতিরিক্ত পুষ্টিদায়ক পানীয়। জিরাতে বিদ্যমান থাকা আয়রন গর্ভস্থ ভ্রূণের, বাচ্চার এবং মায়ের আয়রনের চাহিদা পূরণ করে।
ত্বকের পুষ্টি যোগায়: জিরা পানি ত্বককে সুস্থ রাখতে সহায়তা করে। এটি হজম শক্তি বাড়িয়ে ত্বকে পর্যাপ্ত পরিমাণ পুষ্টি প্রদান করেন।
ওজন কমাতে সহায়ক: জিরা পানি পান করলে ক্ষুধা নিবারণ হয়। সেক্ষেত্রে আপনি প্রতিদিন সকালে খালি পেটে এবং রাতে ঘুমানোর পূর্বে জিরা পানি পান করতে পারেন। এতে খাওয়ার চাহিদা কমে যাবে যা আপনার ওজন কমাতে সাহায্য করবে। তবে ওজন কমাতে চাইলে জিরা পানির সঙ্গে মিষ্টি কোনো কিছু মেশাবেন না।
তলপেটের ব্যথা কমাবে: বিভিন্ন কারণে হওয়া তলপেটের ব্যথা বিশেষ করে মেয়েদের জন্য জিরা পানি খুবই ভালো। এটি তলপেটের ব্যথা কমাতে সাহায্য করে। তবে মেয়েরা শুধু বিশেষ দিনগুলোতে নয়, মাসের অন্যান্য দিনগুলোতেও জিরা পানি পান করতে পারেন।
* অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট সরবরাহ: নিয়মিত জিরা পানি পান করলে দেহে পর্যাপ্ত পরিমাণে ভিটামিন এ, সি এবং ই পাওয়া যায়, যা আমাদের বার্ধক্যের সঙ্গে লড়াই করে। এছাড়া নিয়মিত জিরা পানি পান করলে মুখে ব্রণ হওয়া রোধ হয়। এটি ত্বকের যত্নে বেশ ভালো। ত্বকসহ শরীরের জ্বালাপোড়া কমাতেও জিরা পানি সাহায্য করে। (এখানে বাজারে পাওয়া কৃত্রিম কোনো জিরা পানির ড্রিংস এর কথা বলা হয়নি)